ফরিদপুর মেডিকেল কলেজের পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থী নয়ন চন্দ্র নাথের লাশ পাওয়ার সংবাদ শোনার পর থেকে বাড়ীতে শোকের মাতম চলছে। আত্মীয় ও প্রতিবেশীরা নয়নের মৃত্যুর খবর শুনে সমবেদনা জানাতে জড়ো হচ্ছেন ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার রামনগর ইউনিয়নের আজিজ ফাজিলপুর গ্রামের বাড়ীতে।
নয়নের মা সন্ধ্যা রানী দেবী বার বার জ্ঞান হারাচ্ছেন। নয়নের একমাত্র বোন বৃহস্পতিবার তাঁর নিখোঁজের খবর শুনে চট্টগ্রামের মিরসরাই এলাকার স্বামীর বাড়ী থেকে বাবার বাড়ীতে পৌঁছে। ভাইয়ের মৃত্যুর সংবাদ শুনে সেও বার বার কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। শনিবার নয়নের নিজ এলাকায় সারাদিন তার মৃত্যুর সংবাদ সাধারনের মধ্যে আলোচনার বিষয় হয়ে ওঠে। সার্জারী ডাক্তার হতে পারবে না, এ কারনে নয়ন ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে বলে পরিবার বা স্বজনরা বিশ^াস করতে কষ্ট হচ্ছে। তাঁরা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবী জানান।
দাগনভূঞা উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ ও খৃষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও নয়নের চাচা বিজন চন্দ্র নাথ জানায়, নয়ন একজন মেধাবী ছাত্র ছিল। এলাকায় খুবই ভাল ছেলে হিসাবে পরিচিত ছিল। স্থানীয় আতাতুর্ক উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও ফেনী সরকারী কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করে। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে সে ছিল সবার ছোট। বাবা দিলীপ চন্দ্র নাথের খুব ইচ্ছা ছিল ছেলেকে একজন ডাক্তার হিসেবে দেখার। গত প্রায় ৮ মাস আগে তিনি মারা গেছেন। নয়নের বড় ভাই তরুন চন্দ্র নাথ কুয়েত প্রবাসী। ভাইয়ের মৃত্যু সংবাদ শুনেই বাড়ীর উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়েছেন। মেঝ ভাই স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। পরিবারসহ বাড়ী ও ঘনিষ্ট স্বজনদের মধ্যে নয়নই একমাত্র ডাক্তার হবে এটাই ছিল সবার আশা আকাঙ্খা। তাঁর মৃত্যুতে সব আশার মৃত্যু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার পরীক্ষার আগে বের হয়ে পরীক্ষার হলে না গিয়ে নয়ন নিখোঁজ হওয়ার সংবাদ শোনার পর তাঁর মেঝো ভাই সুজন চন্দ্র নাথ ও খালাত ভাই উত্তম নাথ ফরিদপুর গেছেন। শনিবার লাশের ময়না তদন্ত শেষে নয়নের লাশ নিয়ে তাঁরা বাড়ীর উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন। আগামীকাল রোববার সকালে নিজ গ্রামে নয়নের লাশ সমাহিত করার কথা রয়েছে বলে জানান তাঁর চাচা বিজন চন্দ্র নাথ।
স্থানীয় রামনগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন জানান, তিনি ঘটনাটি শোনার পর নিজেই শোকাহত হয়েছেন। স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে জেনেছেন-নয়ন খুই মেধাবী ও বিনয়ী ছেলে ছিলো।
ফেনী ট্রিবিউন/এএএম/এটি/এপি